রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতির বিরুদ্ধে সাধারণ এক শিক্ষার্থীকে গভীর রাতে রুমে ডেকে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি ওই শিক্ষার্থীকে শারিরীক নির্যাতনেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর দেওয়া এক অভিযোগ পত্রের মাধ্যমে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এ তথ্য জানান। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম নুর আলম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত নেতার নাম আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বদেশ। তিনি একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১ টার দিকে বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শাহীন ও তানভীর নামে দুইজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে, মতিহার হলের ১৩৬ নম্বর রুমে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই স্বদেশ জুবাইয়ের, জারিফ, নাবিল ও অজ্ঞাত একজন উপস্থিত ছিলেন। সকলে মিলে তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে, এক পর্যায়ে তানভীর ও জুবাইয়ের ভুক্তভোগীর মাথার পশ্চাৎভাগে আঘাত করতে থাকলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

আরও পড়ুন…রাবি ছাত্র উপদেষ্টাকে পদ থেকে অপসারণ এবং সান্ধ্য আইন বাতিলের দাবি

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী নুর আলম বলেন, তাদের সাথে আগে আমার সাথে কোনো দ্বন্দ ছিলো না। দ্বন্দটা হয়েছে রুম নিয়ে। আমার যে রুমে অ্যালোট (বরাদ্দ) ওই রুমে ওদের কাউকে তুলতে চায়। আর আমাকে প্রথম ব্লকের চারজনের রুমে পাঠাতে চায়। কিন্তু আমি দু’জনের রুম ছেড়ে চারজনের রুমে যেতে চাইনি। ‘স্বদেশ’ আমাকে বলে এইরুমে থাকতে হলে আমাকে বেডশেয়ার বা ফ্লোরিং করে থাকতে হবে। আর থাকতে অসুবিধে হলে অন্য ব্লকে চলে যেতে বলে। তাদের কথা মতো না চলায় আমাকে এইভাবে নির্যাতন করেছে।

অভিযোগের বিষয়ে স্বদেশ বলেন, নুর আলম আমার বিভাগের ছোটভাই। সে এক বড় ভাইয়ের সাথে বেয়াদবি করেছিল। তাই বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য তাকে রুমে ডেকেছিলাম। বিষয়টি মিমাংসা হয়ে গিয়েছিল। তবে সেখানে তাকে কোনো মানসিক নির্যাতন করা হয়নি। সে অনেক সহজ-সরল ছেলে। সে এরকমটা করতে পারে না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে কারো ইন্ধনে সে এই অভিযোগ করেছে।

মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ বলেন, বাংলা বিভাগের এক জুনিয়র ও দুই সিনিয়রের মধ্যে সিট নিয়ে একটা ঝামেলা হয়েছিল। আমি ডেকে এর সুরাহা করে দিয়েছি। ওই শিক্ষার্থী ওর সিটেই থাকবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, অভিযোগ পত্রটি পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য দুইজন সহকারী প্রক্টরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সত্যতা মিললে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।